কোড অফ লাইফ

  • জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের দায়িত্ব গুলো কি কি?
  • বুঝ হবার পর থেকে নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে কেনো?
  • নিজেকে নিয়ে ভাবতে গেলে কিভাবে ভাবতে হবে?
  • ভাবনাগুলোর ধারাবাহিকতা
  • সুন্দর একটা টার্গেট এবং সে অনুসারে এগিয়ে যাবার রোড ম্যাপ
  • রোড ম্যাপ তৈরীতে মেধা খাটানো এবং অন্য মেধার পরামর্শ নেয়া
  • জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে নিজেকে স্বপ্নে না রেখে বাস্তবে নিয়ে আসা



চিন্তা শুরু করার বয়স

ধরা হয় টিন এইজ শুরু থেকেই মানুষ নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করে অথবা ভাববার মতো জ্ঞান তৈরী হয়। তুমি যদি টিনএজার অথবা এর উর্ধ্বের হয়ে থাকো তবে লেখাটা তোমার জন্য।

জন্মের পর থেকেই একটি মানুষ একটি কল্পনার জগত পেয়ে যায়। সেজগতটিতে সে নিতান্তই একটি অপক্ক ছাত্র। যা দেখে তাই শিখে। বলা হয়ে থাকে ১-৬ বছরের মধ্যেই একটি শিশুর নিউরনের ৮০% বিন্যস্ত হয়ে যায়। সঠিক অথবা ভুল যাইহোক সব কিছু দিয়েই সে তার নিজেকে মানুষ হিসেবে দাড় করাতে চেষ্টায় থাকে।

কিন্তু যখনই সে এগারো-বারো বছর পেড়িয়ে যায় তখনই তার মধ্যে একটি নিজস্ব নিজস্ব ভাব চলে আসে। সে সময় সে নিজেকে নিয়ে ভাবতে বেশি পছন্দ করে। এবং তার ভাবনাগুলো সে সর্বাধিক সঠিক বলে ধরে নেয়।


চিন্তার ফলাফল

পারিবারিক কারনে অনেকেই ভালো-মন্দগুলো জাস্টিফাই করার সুযোগ পায়। অনেকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে অনেক ভুল চিন্তা নিয়ে বড় হতে থাকে। কিন্তু তার মধ্যকার ভুলগুলোকে সে ভুল নয় সঠিক ধরেই বেড়ে উঠে। একটা পর্যায়ে সে যখন সম্পুর্ণভাবে বুঝে নেয় যে তার ভাবনাটা সঠিক এরপর তাকে সে ভুলটা থেকে ফেরানো কঠিন অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

আর পরিবেশ কিংবা পরিবারের কারনে সে যদি ভুলের সাথে সাথে সেগুলো শুদ্ধ করে নেয়ার সুযোগ পায় তবে তার চলার পথটা অনেকটাই সাবলীল এবং সহজ হয়ে উঠে।


চিন্তার কিছু উদাহরণ

চিন্তার শুরুতে ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন বিষয় সেগুলো তার বাবা-মা থেকে জেনেছে সেগুলো সঠিক কিনা তা খোজ করে দেখে। সেক্ষেত্রে তার সহদর ভাই-বোন অথবা পরিবারের অন্যান্য বয়োজ্যাষ্ঠদের সাথে তা শেয়ার করে। অবশ্য এ শেয়ারটা তখনই সে করতে চায় যখন অন্যরা তাকে সহযোগিতামুলক মনোভাব নিয়ে সময় দেয়। সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েই সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত উপনিত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু,

যারা তাদের পরিবার কিংবা পরিজনের কাছ থেকে সেটা পেতে পারে না তখন তারা তার বন্ধু-বান্ধব কিংবা অনাত্মিয় কাছের মানুষগুলোর মধ্যে সে উত্তরগুলো খোজে। আর এক্ষেত্রে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়ে ভুল কিছু তথ্যকে সঠিক বলে গ্রহণ করার সুযোগ পায় এবং পরবর্তীতে যা তার বাবা-মার তথ্যের সাথে যাচাই করে বাবা-মা’কে অশুদ্ধ কিংবা ভুল বলে নিজের মধ্যে প্রমান করে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের সন্তানকে একান্তে এবং সুন্দর করে বোঝানোর চেষ্টা করে এবং সফলও হয় কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষ করে যে সকল বাবা-মা বিভিন্ন কাজে (ঝামেলায়) ব্যস্ত থাকে তারা বিষয়টিকে গুরুত্বহীন ভেবে নেয়। আর যে সকল বাবা-মা অশিক্ষিত, অসচেতন এবং নিম্ন শ্রেণির তারা ব্যপারটাতে সম্পুর্ণই উদাসীন থাকেন।

ফলে যা হবার তাই হয়। তাদের সাথে সন্তানদের দুরুত্ব ক্রমশঃই বাড়তে থাকে। 


চিন্তার ফলাফল

পরবর্তীতে টিনএজার বয়সেই তারা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়। যারা সঠিক শিক্ষা ও সহযোগিতার ফলে সুস্থ সুন্দর ভাবনাগুলো ভাববার সুযোগ পায় তারা এগিয়ে যায় সুন্দর একটি ভবিষ্যতের দিকে। কারন ততদিনে সে জেনে গিয়েছে তার সামনে এগিয়ে যেতে কি কি প্রয়োজন। আর এরি সাথে এটাও জেনে গেছে তার সাথে রয়েছে তার অভিজ্ঞ এবং জিনিয়াস বাবা-মা। কিন্তু,

দ্বিতীয় দলে যারা আছে অর্থাৎ যারা বাবা-মা’কে ইতোমধ্যেই ভুলের দলের ফেলে দিয়েছে সেসব ছেলে-মেয়েরা চরম হতাশায় এবং অনেকটা একা একা এগিয়ে চলা শুরু করে। বিশেষ করে তাদের মধ্যে হতাশা কিছুটা জায়গা করে নেয়। এবং এক পর্যায়ে তারা তাদের বাবা-মাকে তার অন্যান্য বন্ধুদের বাবা-মাদের সাথে তুলনা করে খারাপ ভাবে তুচ্ছ করতে শিখে যায়।


এখানে আমি সঠিক পথের টিনএজাদেরকে “এ” ক্যাটাগরীতে রাখছি আর

ভুল পথের টিনএজারদেরকে “বি” ক্যাটাগরীতে রাখছি।


আমি মুলত প্রথম “এ” ক্যাটাগরী নিয়ে লিখবো।


“এ” ক্যাটাগরী

যাদের তার পরিবারের সাথে একটা ভালো আন্ডারষ্টেন্ডিং আছে তাদেরকেই আমরা এ শ্রেণি ছেলে-মেয়ে বলছি। এরা সুন্দর এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো একটা পরিবারে বিলং করে। তাদের পড়ালেখা তথা জীবন যাপনের ক্ষেত্রে তেমন কোন সমস্যা দেখা যায় না। এ ক্যাটাগরীর ছেলে-মেয়েরা বিশেষ ক্ষেত্রে অনেকটা মেধাবিও হয়ে থাকে।

কিন্তু তারাও আবার (টিনএজ বয়সে) তাদের চিন্তায় বিভিন্ন ভুলের কারনে সুন্দর পথ থেকে ছিটকে যেতে পারে সেটাও মিথ্যে নয়।


কারনগুলো কি?

  • নিজের মধ্যে একটা বড় বড় ভাব চলে আসা
  • নিজের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করা
  • বড়দের মধ্যে বিভিন্ন মতানৈক্য দেখা
  • চাহিদা অনুযায়ী বাবা-মা তাদের চাহিদা পুরনা না করা
  • প্রেম/যৌনতা সংক্রান্ত দুর্ভাবনা তৈরী হওয়া
  • ভুল/মন্দ বন্ধুদের প্ররোচনা
  • সামাজিক বিশৃংখলা


একটা সুন্দর ভাবনা

তুমি চাইলেই ফাকি দিতে পারো। কিংবা চাইলে নিজের সময়টাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে নিজের জীবনটাকে সুন্দর একটা ভিত্তিতে পৌছানোর অবস্থান তৈরী করার চেষ্টা করতে পারো। 


কি করছো?

মন যেমনটা চাইছে তাই করছো। ইচ্ছে হলো পড়ছো, ইচ্ছে হলো খেলছো, ইচ্ছে হলো ঘুমাচ্ছো। ইচ্ছে হলো কম্পিউটার নিয়ে বসছো। তারমানে কি দাড়ালো? তোমার নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য কিংবা উদ্দেশ্য নেই। নেই কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছার রোড ম্যাপ। কি মনে হয় তোমার? তোমার জন্য ভালো ব্যপারটা ভালো হচ্ছে?

আমরা জানি, কিছু একটা ভালো ভাবে সম্পন্য করতে হলে তার জন্য চেষ্টা এবং নির্দিষ্ট ইচ্ছা শক্তি লাগে। আর তোমার যদি কোন কিছুই নির্দিষ্ট করা না থাকে তবে তুমি চেষ্টা করবে কি এবং ইচ্ছা শক্তি কাজে লাগাবে কোথায়?


অর্থাৎ, আমাদেরকে অবশ্যই নির্দিষ্ট পথে নির্দিষ্ট কাজ করে তারপর সুন্দর একটি লক্ষ্যে পৌছাতে হবে।


..................... চলমান।