একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু

অল্প সময়ের ব্যবধানে সময় হয়ে গেলো অনেক লম্বা। আমরা কেউ লক্ষ্য করতে পারিনি সময়টা কতটা সময়ে মাইগ্রেশন করেছেন। আমাদেরকে স্তব্ধ করে দিয়ে অসময় এসে উপস্থিত হলো সময়ের মাঝে। আমি ভাবতে চেষ্টা করছিলাম- আমিতো বেঁচে আছি। আমার বাঁচাটা এক্ষেত্রে ধর্তব্য কোন ব্যপার নয়। 

সে নেই,

সময় তাকে নিয়ে চলে গেছে। এভাবে চলে যাবার কথা ছিলো কিনা জানিনা, কিন্তু এখন সে নেই। 

এইতো কিছুটা সময় আগেও আমার ক্যামেরার সিসিডিতে সে দাড়ানো ছিলো, জীবিত ছিলো। ছিলো দুরন্ত প্রান চঞ্চল যুবা। মুখের সেই নিষিক্ত হাসির ক্যামোফ্লেজ এখনো নিউরন আন্দোলিত করছে।

সে বলতো-

"ভাই, অনেক বিরক্তিকর সময় পেছনে ফেলে এসেছি। সামনে সেসময়গুলো আর দেখতে চাইনা। ভালো সময় বেয়ে বেয়ে চলতে চাই। সর্বপরি আপনাদের সবাইকে নিয়ে চলতে চাই।"

ভালোবাসা জাগানিয়া কথাগুলো জানিনা কোনদিন মুছে যাবে কিনা, কিন্তু এগুলো মুছে যাবার নয়। সত্য হলো- সে নেই। সে সত্যি সত্যি চলে গেছে।

দেবতাখুমে যাবার পুরোটা ট্রেইটে সে ছিলো চঞ্চল ছুটে চলা হরিন। পুরোটা পথেই সে সবাইকে ছাড়িয়ে এমনকি গাইডকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে ছিলো পুরো দলের এগ্রভাগে। মাঝে মধ্যে তার দিকে অভিযোগ ছুড়ে দিয়েছিলাম-

"ভাই আমি দুর্বল, তাই বলিয়া আপনি উত্তম হইবেন না কেনো? আমাকে একা ফেলে সামনে চলে যাবেন? এমনতো কথা ছিলো না।"

অবশ্য শেষ মেশ সে সবার আগেই চলে গেলো। সবাইকে ছাড়িয়ে।






১নং স্থান থেকে আমরা সবাই ভেলায় চড়েছিলাম।

৩নং স্থানে আমরা ভেলা থেকে নেমেছিলাম। এখানেই সব ভেলা রাখা হয়।

৪নং স্থানটা স্রোতের জায়গা। সেখানে গিয়ে আমরা বসেছিলাম।

৫নং জায়গাটা প্রচন্ড স্রোত এবং রিস্কি জায়গা। দুএকজন সেখানে গেলেও আমরা সবাই ৪নং স্থানেই বসেছিলাম।

২নং স্থান অর্থাৎ বাঁকা মোড়টাতে তাকে আমরা খুজেঁ পাই। ও বসে ছিলো ৩নং স্থানে ভেলায়। আমরা এগিয়ে গিয়ে ৪নং স্থানে পাথরে বসেছিলাম। পেছনে সে থেকে গিয়েছিলো। বলেছিলো সামনে যেতে চায়না। বেশকিছুখন পর যখন পেছন ফিরে তাকে দেখতে পাইনি তখন ভেবেছিলাম ভেলায় কিংবা অন্য কারো নৌকায় করে সে ডাঙ্গায় চলে গেছে।

কিন্তু যখন আমরা ফিরতি পথ ধরি তখন আমরা ২নং মোড়ে দেখতে পাই। কিন্তু তখন সে মৃত।